Bosonto Porag, Mizanur Rahman Shamsheri, মিজানুর রহমান শমশেরী [fiction novels to read txt] 📗
Book online «Bosonto Porag, Mizanur Rahman Shamsheri, মিজানুর রহমান শমশেরী [fiction novels to read txt] 📗». Author Mizanur Rahman Shamsheri, মিজানুর রহমান শমশেরী
এই দেখা যদি শেষ দেখা হয়
তবে কেন আসিলাম,
ভালোবাসা যদি বেদনাই হয়
কেন ভালোবাসিলাম।
ফুটিবার আগে যদি ঝরে ফুল
কী হবে প্রহর গুনে,
জানিবার আগে যদি যাই ভুলে
কী হবে কাহিনি শুনে!
আকাশ জেনেছে চাঁদের সুষমা
সাগর জেনেছে পানি,
তুমি যে আমার এত কাছাকাছি
তবু নেই জানাজানি।
রাতের আকাশে চাঁদের মরীচি
যখন সুষমা আনে
সাগরের জল পারভাঙা তটে
কথা কয় কানে কানে।
সারা তপোবন ঘুমায় যখন
রাত্র গভীর হলে
নিমতলা থেকে ডাক দেয় পাখি
‘বউ কথা কউ’ বলে।
বহুদিন হতে সে ডাকে আমার
দু চোখে এসেছে নিদ
সেই ফাঁকে এসে জানি না কখন
কেটেছো মনের সিঁদ।
লুটে নিয়ে গেছো তনু-মন-প্রাণ
জীবনের যত ধন
সব নিয়ে গেছো, রেখে গেছো শুধু
ব্যথা আর ক্রন্দন।
হাতের বাঁশরি বাজে না তো আর
তালছাড়া হয়ে যায়
সুরের লহরি আসে না তো আর
আজিকার কবিতায়।
শেফালি কুসুম আতিয়া যখন
শুনিবে সকল কথা
ওদের চোখেতে যদি আসে জল
কোথা রবে মানবতা!
বিরহবেদনা বুকে নিয়ে যদি
আমারই সময় কাটে
একবারও তুমি কাঁদিবে না এসে
সেই পুকুরের ঘাটে!
যেখানে রয়েছে কচুরি ফুলেরা
লাজুক বঁধুয়া বেশে
হংসমিথুন জলকেলি করে
প্রতিদিন যথা এসে,
সন্ধ্যা কি কভু নামিবে না আর
সোনালি ধানের শিষে?
এতটুকু স্মৃতি রহিবে না বুঝি
জীবনের সাথে মিশে।
সবকিছু তুমি ভুলে যেতে পারো,
পারিবে কি ভুলে যেতে
আসবে যখন নিশিজাগা চাঁদ
তোমাদের আঙিনাতে?
মনের বনেতে মন হারাবার
এসেছিল যত রাত
বহু রজনির একটি প্রমাণ
ঘুমভাঙা ওই চাঁদ।
আমি চলে যাব- বহু দূরে যাব,
আসিব না কোনোদিন,
দু ফোঁটা চোখের জল ফেলে ওগো
শোধ করে যাব ঋণ
তোমার চিঠিতোমার চিঠি পেলাম :
আজকে বিকেলে মনের খেয়ালে
যখন ইঁদারার কাছে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
তোমার চিঠিতে খুলে ছিল স্মৃতির সিংহদ্বার,
বের হয়ে এলো সহস্র স্মৃতির বলাকা,
সম্মিলিত পাখার প্রভঞ্জনে
বাঁধ ভেঙে গেল কল্পনার।
কৃষ্ণচূড়ার শাখে
আর পলাশের লাল গুচ্ছে
খুঁজে পেলাম তোমার চিঠির ভাষা,
নতুন ঠিকানায় নতুন শহরে তুমি লিখছো
তুমি লিখছো অনেক অনেক কথা।
শেষ চিঠিঅনেক আশার একটু ফসল
তোমার কাছে পাঠিয়ে দিলাম
এটাই আমার শেষ চিঠি;
অনেক রাতের আশার স্বপন
জড়িয়ে ছিল জীবন পাতায়
কবিতা আর গানের খাতায়
আজ থেকে সব মুছে দিলাম
ভুলেও যদি আর ডাকি
এটাই আমার শেষ চিঠি।
তোমার কথা যদিই মনে পড়ে
দেখবো চেয়ে রাতের আকাশ
যেখান থেকে জ্যোৎস্না এসে ঝরে
মরুর বুকে সাগর তীরে,
তোমার কথা যদিই মনে পড়ে
ছুটে যাব তেপান্তরের মাঠে
আনবো খুঁজে দুঃসাহসে
ঝিনুক থেকে মুক্তা চিরে চিরে।
আর যাব না আলভাঙা সেই মাঠে
যদিও যেতাম তোমার সাথে
সূর্য যেথা হোঁচট খেয়ে পড়ে
সন্ধ্যা হলে রঙের ফসল এনে
কচি ধানের পাতার শিহরণে
আপনা হতেই জীবন জাগে
ভুল করেও আর যাব না
ক্লান্ত বিকেল যদিও নিবে টেনে।
তুমিই যখন রইলে না আর পাশে
কী হবে আর ওসব দেখে
আঁখির পাতায় স্বপ্ন এঁকে
দু চোখে মোর ক্লান্তি নেমে আসে,
নিজের কাছে নিজেই বাধা মেনে
সীমার মাঝে আটকে র’ব
ভাববো তুমি কেউ ছিলে না কভু
যখন তুমি রইলে না আর পাশে।
কথা দিলাম থাকবো না আর
তোমার পথের কাঁটা হয়ে
জীবন পথের যথাতথা
একলা চলে যেয়ো চলন্তিকা,
দেখেও তোমায় ডাকবো না আর
ক্ষণিক দেখে পথের পাশে
নাইবা হলো পুনঃ জানাজানি
ভাববো তুমি চির-অনামিকা।
এইটুকুই চাই তোমার কাছে
তোমায় যেন ভুলতে পারি
এমন আশীষ করে যেয়ো
যখন আমি ভুলেই গেলাম,
ব্যর্থ রাতের স্বপ্ন দেখে আর কী হবে?
তারার আকাশ মেঘে ঢাকা
আঁধার ঘেরা শূন্য পৃথিবীতে
আমিই শুধু অবাক পেলাম।
ছন্দপতনআমার কথা নাইবা যদি বোঝো
আহা! তবে কেমন করে
বুঝিয়ে বলি,
দেখছো না এই মধু মাসে
কেমন করে কেটে গেল
স্নিগ্ধ মধুর রাতগুলি।
তুমি যে মোর এত কাছাকাছি
ফাগুন এসে চলেই গেল
তবু যে নেই জানাজানি,
আহা! তুমি শুনছো না ওই
হাসনাহেনার শাখায় শাখায়
মৌমাছিদের কানাকানি।
ইচ্ছে করে চাঁদনি রাতে
তোমার কোলে মাথা রেখে
ঘুমিয়ে থাকি,
হাজার রাতের স্বপ্ন নিয়ে
তন্দ্রাহারা দুটি চোখে
রঙিন মধুর স্বপ্ন আঁকি।
আহা! তুমি বুঝলে না যে
ইচ্ছে আমার, তোমায় আমি
নিবিড় করে কাছে টানি,
এমন রাতে ঘুম পাবে কি!
আহা! তুমি শুনছো না ওই
মৌমাছিদের কানাকানি।
ভাবান্তরচাঁদ : তুমি অমন করে মিষ্টি হাসি আর হেসো না,
কুসুম : তুমি পরাগ মেখে অমন ভালো আর বেসো না।
সকল সুখের পায়রাগুলো উড়িয়ে দি’ছি অস্তাচলে,
রাতের সকল স্বপ্নগুলো ভাসিয়ে দি’ছি চোখের জলে।
নূপুর : তুমি রুনুঝুনু অমন তালে আর বেজো না,
সন্ধ্যা : তুমি রক্তরাগে অমন সাজে আর সেজো না।
বসন্তের এই বসুন্ধরায় কোকিল ডাকা কুহু স্বরে,
আহত মোর গানের পাখি অনেক ব্যথায় কেঁদে মরে।
একলা পাখি ডাকে
জ্যোৎস্না রাতে একলা ডাকে পাখি,
‘বউ কথা কও’, বটের শাখে নিদ্রাবিহীন আঁখি।
এমন রাতে নেই যে কাহার নিদ!
জানি না তার নিদমহলে কাটলো কে বা সিঁদ।
একলা পাখি ডাকে বটের শাখে,
আগুনজ্বলা ফাগুন রাতে মেঠো পথের বাঁকে।
ফুলের বনে জুঁই চামেলির মেলা,
গোলাপ ডালে মৌমাছিদের খেলা।
স্তব্ধ নিঝুম রাত-
ঘুমিয়ে গেছে বেঁতুল বনে জোনাকিদের ঝাঁক।
ক্লান্ত চাঁদের জ্যোৎস্না এসে ঝরে,
ঝিকিমিকি মুক্তো ঝরা তপ্ত বালুর চরে।
ঘুমিয়ে গেছে বাঁশবাগানে শালিক পাখির ঝাঁক,
থেমে গেছে আমবাগানে হুতোম পেঁচার ডাক।
ঘুমিয়ে গেছে নব-বধূর ক্লান্ত দুটি আঁখি,
এমন রাতে একলা ডাকে পাখি।
জানি না তার মনের কথা, চাঁদ বুঝিবা জানে,
তাইতো এমন রাতে
একলা চাঁদের সাথে
সাথিহারা জেগে আছে ব্যথা ভরা প্রাণে
আমি জানি না তার মনের কথা, চাঁদ বুঝিবা জানে।
আকাশেতে দুলছে দোদুল চাঁদ,
অনেক ব্যথায় কাঁদরে পাখি কাঁদ।
কান্না শুনে যদিই বা তোর হারিয়ে যাওয়া ধন,
একটু এসে পাশে বসে ভুলতে কতক্ষণ।
কিন্তু পাখিরে…
হারিয়ে পাওয়ায় দুঃখ ভোলা যায়
পেয়েও হারায় যে…
তার কথা কি কেউবা মনে রাখে!
ফাগুন বনে একলা পাখি ডাকে।
সন্ধ্যাস্মৃতিওই দূর বন রাঙায়ে গগন সন্ধ্যা যখন আনে,
তখন আমার হৃদয়-বিহগ বিভোর পীযূষ গানে।
সন্ধ্যাকে আমি বড়ো ভালোবাসি যখন সন্ধ্যা নামে,
মনে হয় সেই মেঘলা গোধূলি আবার এসেছে গ্রামে।
স্মৃতির পরশ দোলা দেয় মনে, বিস্মৃত ইতিহাস,
খুঁজে ফিরি হায় আঁখির তারায় এলো বুঝি মধুমাস।
সেই কবেকার কথা, চলে গেছো দূরে, মনে নেই আজ আর,
চরণচিহ্ন রেখেছে সন্ধ্যা বিস্মৃত আলেয়ার।
সেই মনে পড়ে রাতের আঁধারে জোনাকি মেয়ের সনে,
ঝিঁঝিরা বাজাতো ঘুমের নূপুর সন্ধ্যার আগমনে।
জুঁই চামেলির মঞ্জুষা নিয়ে জাগিত যখন বন,
কৃষ্ণচূড়ার রঙিন শাখারা দোলা দিয়ে যেত মন।
শেফালি মালতি রজনিগন্ধা বাতাসে বোলাতো বেগ,
তোমার আমার হৃদয়-আকাশে ডাকিত শ্রাবণ মেঘ।
সেই নিমতলা যেখানে রচিত তোমার আমার অভিসার,
শরতের চাঁদ চুমু খেয়ে যেত কেঁপে কেঁপে বার বার।
তোমাকে আমার এত কাছে পেয়ে কত ছিল অভিলাষ,
আকাশের গায় আজো আছে লিখা সেইসব ইতিহাস।
তুমি আজ কাছে নেই তবু তো সন্ধ্যা পেতেছে আঁচল,
তবু তো ডাকিছে বিহগ বিহগী মহুয়া মেলেছে দল।
শরতের চাঁদ সন্ধ্যা আকাশে রঙিন মেঘেতে নেয়ে,
কানাকানি করে কত কথা বলে শিউলিরে কাছে পেয়ে।
ভাঙা নদীতটে বকুলের শাখে ‘বউ কথা কউ’ স্বরে,
বঁধু হারানোর ব্যথা নিয়ে বুকে আজো পাখি কেঁদে মরে।
আহত মনের গানের পাখিরা বার বার বাধা পায়,
তবু তো মনের রঙিন স্বপনে দূর পথে উড়ে যায়।
তৃষ্ণিত আকাশ ঢালিছে সুষমা সন্ধ্যার আহ্বানে,
তোমার সে গান শুনিতেছি তাই বাতাসের কানে কানে।
সন্ধ্যার কাছে খুঁজে পাই আমি জীবনের যত কথা,
তাই বুঝি মোর এত ভালো লাগে সন্ধ্যার নীরবতা।
ক্ষণিকাআঁচল উড়ায়ে নদীতটে এলো
কোন সে উদাসী মেয়ে!
তেতালার ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
তাই দেখি চেয়ে চেয়ে।
ভাঙা নদীতটে নব কিশলয়ে
এলো বুঝি মধুমাস,
ভীরু কালো চোখে মনে হয় যেন
আমাকে করিবে গ্রাস।
প্রেয়সী বধূর বুকের পরশ
লেগে আছে বুঝি গায়,
খোঁজে অভিসার ভাঙা নদীতটে
মিলনের অভিপ্রায়।
ছলছল নদী বয়ে চলে যায়
বাতাসে ওড়ায় হিয়া,
আশ্বিনী মেঘে লুকোচুরি খেলে
কোন সে অজানা প্রিয়া।
মনে হয় যেন কতকাল ধরে
চিনি গো তাহারে চিনি,
যুগ যুগ ধরে শুনে আসা ওই
কাঁকনের রিনিঝনি।
বাতাসে ওড়ায় সুরভি মধুর
অজানা বধূর চুল,
উদাসী মনের প্রণয় স্বপন
ভরে দেয় আঁখিকূল।
তোমার জন্যআমি একটা কবিতা লিখবো
একটা কবিতা,
যে কবিতায়
Comments (0)