Bosonto Porag, Mizanur Rahman Shamsheri, মিজানুর রহমান শমশেরী [fiction novels to read txt] 📗
Book online «Bosonto Porag, Mizanur Rahman Shamsheri, মিজানুর রহমান শমশেরী [fiction novels to read txt] 📗». Author Mizanur Rahman Shamsheri, মিজানুর রহমান শমশেরী
অতন্দ্র ভীমরুল
ছুটবে যূঁথিকার বনে
মধু ফাল্গুনে
গাইবে সঙ্গীতা।।
আমি একটা ছন্দ লিখবো
একটা ছন্দ
যে ছন্দে
চাঁদের হাসিতে ধরা
পীযূষ প্রবাহ ভরা
বিহগে দিবস শর্বরী
রাখিবে ধরি
কুসুমে সুগন্ধ।।
আমি একটা গান লিখবো
একটা গান,
যে গানে
ভাঙবে নিশুতি রাত
আনবে নব প্রভাত
সোনালি স্বপন ভরা
আকুল করা
এ হৃদয় প্রাণ।।
এমন যদি হতোএমন যদি হতো-
আমার বুকের আগুন দিয়ে
তোমার বুকের ফাগুন জি’য়ে
আমার চোখের অশ্রুধারা
তোমার চোখে ফুল ফোটাতো,
এমন যদি হতো!
হয়ত সেদিন তোমার বনে
জাগতো জোয়ার আপন মনে
প্লাবনে তার ভেসে যেত
অনাগত- ভাগ্যহত,
এমন যদি হতো!
তখন কি আর মনে হতো
আমার কথা আগের মতো
ঘুমিয়ে থাকা ঝিমিয়ে থাকা
স্বপন মাখা হৃদয় রত,
এমন যদি হতো!
প্রশ্বাসআমার কথা বুঝবে না, জানি তুমি বুঝবে না,
চোখের জলে হৃদয়তলে ফুটলো যে ফুল
জানি তা কেউ খুঁজবে না।
আমার কথা বুঝবে না, জানি তুমি বুঝবে না।।
আমার সকল কুড়িয়ে পাওয়া মুক্ত হাওয়ায় এই আবরণ,
ঘোমটা পরে লুকিয়ে আছে আত্মভোলার অন্তঃকরণ।
আপন গানে আপনি বিভোর, জানি সে গান শুনবে না
ফুটলো ক’টি পদ্মকুসুম হৃদয়-সরোবরে
জানি তা কেউ গুনবে না।
আমার কথা রাখবে না, জানি তুমি রাখবে না
চিত্ত যেদিন শুকিয়ে যাবে, নিত্য আঁখি উঠবে কেঁদে
জানি সেদিন আমার পাশে থাকবে না।
আমার কথা রাখবে না, জানি তুমি রাখবে না।।
সাধ যে ছিল তোমার কাছে অনেক কিছু চাওয়া-পাওয়া
তোমার কাছে তাইতো আমার এমন করে আসা-যাওয়া
ব্যর্থ কবির একটু স্মৃতি জানি তুমি রাখবে না
চিত্ত যেদিন শুকিয়ে যাবে নিত্য আঁখি উঠবে কেঁদে
জানি সেদিন আমার পাশে থাকবে না।।
স্মরণিকাক্রমশ ক্লান্ত কোকিলের ডাক যখন থেমে যাবে
মধ্যাহ্নের দীপ্ত রবি বিস্ময়ে যখন চেয়ে রবে
শ্যামল মাটির প্রান্তে, পৃথিবী যখন হারাবে
সকল সুষমা, তখনো তোমার কথা মনে হবে।
বর্ষার অবিশ্রান্ত বারিধারা যখন হবে শেষ
পত্র-পল্লবে যখন কোনো শিহরণ জাগবে না
সতত কল্পনা হারাবে মনের রঙিন আবেশ
তখনো হে প্রিয়তমা, অনেক দূরে থাকবে না।
অথবা তোমার কথা মনে হবে, যখন পৃথিবী
শীতের কাঁপন লেগে ক্রমশ স্থবির হয়ে রবে
শীতের হিমেল বায়ে লুটে নিবে মালতি করবী
শেফালি, তখনো তোমার কথা আমার মনে হবে।
বিস্মৃত গানএখনো অনেক রাত
আকাশে দুলিছে চাঁদ
পৃথিবীর কোলাহল স্তব্ধ স্থবির,
এখনো ফোটে নি ফুল
মধুবনে ভীমরুল
এখনো ছোটে নি কেউ রাত্র গভীর।
চাঁদের মরিচী মেখে রাতের শিশির,
ঝরিতেছে মহোৎসবে আজি এ নিশির।
পাখিরা ঘুমিয়ে আছে যে যার কুলায়
তরুশাখে পুষ্পরাজি
ঘুমিয়ে পড়েছে আজি
এমন নিশুতি রাতে দোদুল দোলায়।
ঝরিছে অমৃত ধারা প্লাবিয়া গগন
চাঁদের সুষমা মেখে এ মধু লগন
করিতেছে মধুময়
সঞ্চারি স্নিগ্ধমলয়
দিকে দিকে প্রকাশিছে সুখের বারতা
নিঝুম নিশুতি রাতে সয়ে নীরবতা।
সমস্ত পৃথিবী হায় ঘুমে অচেতন
ব্যর্থতা বুকে টেনে এ দুটি নয়ন
হৃদয় মাধুরী দিয়া
কেবল খুঁজিছে প্রিয়া
একদা যে ফুটেছিল শত প্রেম প্রীতি
হারানো দিনের সেই স্মৃতি বিস্মৃতি।
কী মায়া মমতাময় বিরহিত হিয়া
কেঁদে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে নয়ন প্লাবিয়া
ঝরে পড়ে অশ্রুজল
হৃদয়ের শতদল
সহসা নিলয় হয় সহসা ফুটিয়া
আজি এ নিশুতি রাতে বিরহিত হিয়া।
প্রথম দিনের রেশ আজো বাজে প্রাণে
বাতাসে মিলায় সুর অশান্ত গানে
কী যেন কী মনোরথে
পৃথিবীর যুগপথে
শতধা হৃদয় নিয়ে ছুটি সন্ধানে
প্রথম দিনের রেশ আজো বাজে প্রাণে।
অশ্রুমালিকাকে তুমি বালিকা!
বনতলে ঝরা ফুলে গাঁথিছ মালিকা।
প্রভাত সমীরে আজি পূর্ণ অভিসার
বলো, তুমি পূজারিণী কোন দেবতার?
অনন্ত নিলয় পথে যাপিতে প্রহর
কে তোমাকে নিয়ে এলো চেপে দুই কর!
তরুশাখে পুষ্পরাজি প্রকাশিছে বনে,
কী অনন্ত মধুময় ভ্রমরের সনে।
রঙের ফসল লয়ে প্রজাপতি মন,
উড়ু উড়ু করিতেছে সারা তপোবন।
দলিত ফুলিত বুকে সমীর প্রবাহে,
পাতার আড়ালে বসে বিহগিনী গাহে-
সুমধুর গান। শুনে সে গানের রেশ,
অরুণ চকিতে আনে মধুর আবেশ।
এ আনন্দ মধুময় যূঁথিকার বন,
টেনে আনে পৃথিবীতে মধুর স্বপন।
দখিনা সমীর খোলে পূর্বাশা দ্বার,
অনন্ত কবিত্বপূর্ণ সমস্ত সম্ভার।
দোদুল্য বনলতা দুলিত দোদুল,
কে তুমি বালিকা বসে তুলিতেছ ফুল!
কে তুমি শতধা মনে তুলিছ কমল?
কুড়াতে কুসুম কেন ঝরে আঁখিজল!
মনে কী বাসনা তব পূজিবে দেবতা
আঁখিজলে! নীরবে প্রকাশি কথা!
দেবতার চিরচেনা পূজারি বালিকা
তাই বসে সাজাতেছ অশ্রুমালিকা!
সূচনাচাঁদ দেখিতে এসেছিলাম, চাঁদ দেখিতে চাঁদ,
সন্ধ্যাকাশে মেঘের পাহাড় বাঁধলো কঠিন ফাঁদ।
দূর আকাশে মেঘের পাহাড় চুমছে যেথা বন,
হঠাৎ বাধা মানলো সেথা স্বপ্নভরা মন।
হিয়ার চোখের কাজল ভেঙে জাগলে নতুন সাধ,
চাঁদ দেখিতে এসেছিলাম, চাঁদ দেখিতে চাঁদ!
চাঁদ দেখিতে এসেছিলাম হয় নি চাঁদের দেখা,
রঙধনুতে মনের আকাশ বাঁধলো নতুন রেখা।
জীবনকলি উঠলো জেগে ফুটলো মনের শতদল,
পদ্ম-আঁখি শিরাব সাকী প্রিয়ার চোখে অশ্রুজল।
আমার মনের আকাশ ছুঁয়ে ডাকলো ময়ূর কেকা,
চাঁদ দেখিতে এসেছিলাম, চাঁদ দেখিতে চাঁদ।
চাঁদ দেখিতে এসে দেখি চাঁদের হাসিটুক,
রাখছে ধরে প্রতিফলন প্রিয়তমার বুক।
ওষ্ঠ-অধর প্রকম্পিত নতুন শিহরণে,
হৃদয় সরোজ জাগলো আমার নতুন জাগরণে।
তাইতো আমার মনের ফাগুন বাঁধলো না আর বাঁধ
চাঁদ দেখিতে এসেছিলাম, চাঁদ দেখিতে, চাঁদ।
ব্যথার দানআমার এ কবিতাখানি
আজি এ বসন্তে জানি
কারো মনে কাটিবে না এতটুকু দাগ
অথবা বিরহী প্রাণে বসন্তবিরাগ;
তবু জানি, আমার এ তুচ্ছ অবদান
পড়িবে তোমার হাতে
নিশিযামিনী শেষে বসন্তপ্রভাতে।
তাইতো প্রাণের আশায় লুপ্ত ভাষাগুলি
সঙ্গীতের মহারাগে দীপ্ত করে তুলি
তোমার কোমল স্পর্শ অনন্ত মধুর
কী জানি যদিবা পায় এতটুকু সুর!
সুরহারা ভাঙা বীণা কতদিন হায় লুটালো ধূলির বুকে
অনাদরে, কেউ তারে করে নি গ্রহণ,
তিলে তিলে সহিয়াছি স্মৃতির দহন।
সমাধানআজকে আমার হৃদয় জুড়ে
আলোর ফাগুন জাগলো ওরে
উথলে ওঠে হৃদয়প্রাণ,
একটা গান শোনাবে, গান!!
আজকে আমার নয়নপ্রাতে রঙিন মধুর স্বপ্ন আঁকি
সেই কবেকার হারিয়ে যাওয়া আসলো ফিরে গানের পাখি
তপ্তবালু মরুর বুকে জাগছে গুলিস্তান
একটা গান শোনাবে, গান!!
আজকে মনের মণিকোঠায় নেই যে ব্যথার বেগ
দূর আকাশে তাই বুঝি ওই ডাকলো শ্রাবণ মেঘ
মনের বনে ছড়িয়ে গেল নীরব প্রেমের দান
একটা গান শোনাবে, গান!!
নয়ন যারে পায় নি খুঁজে হাজার রাতের অন্ধকারে
আজকে পেলাম বাহুর পাশে পূর্ণ শশীর অভিসারে
যোগ-বিয়োগে ভুল করেও মিলছে সমাধান
একটা গান শোনাবে, গান!!
হারিয়ে যাওয়ার পালাপথের মাঝে কুড়িয়ে পেলাম গন্ধরাজের মালা
এবার আমার কুড়িয়ে নেওয়ার পালা,
হারিয়ে ফেলার দিনগুলো মোর
পালিয়ে গেছে দূরে
তাইতো ধূলার পরে
কুড়িয়ে পেলাম সন্ধ্যারাগে
গন্ধরাজের হার-
তাইতো বারংবার
হৃদয়কোণে ভিড় জমালো আনন্দ ঢেউগুলো
এবার আমার কুড়িয়ে নেওয়ার পালা।
কিন্তু একি! ফুলের দলে পরশ দিলে কাঁপন লাগে গায়
এ ফুল যেন কুড়িয়ে কারে চায়,
যেন কোন বিবাগী পথের পাশে
হারিয়ে গেছে তারে
কুঞ্জবনের ধারে
একদা যে কলির বেশে
ঘুমিয়েছিল বোঁটে
আজ সে ধুলোয় লুটে
আসলে ফিরে সেই বিবাগী বাঁধন দিবে পায়
এ ফুল যেন কুড়িয়ে তারে চায়।
পথের মাঝে রেখে এলাম সেই বিবাগীর ফুল
এবার আমার ভাঙলো সকল ভুল
যে ফুল আমি হারিয়ে গেছি
পদ্মানদীর তীরে
পাব না আর ফিরে
… ব্যর্থ হলো সকল আশা ব্যর্থ পথে চলা
এবারও মোর হারিয়ে যাওয়ার পালা।
Comments (0)