readenglishbook.com » Short Story » Faisal Story, Md Ehsanul Haque Faisal, Md Enamul Haque, বাড়িয়ে দাও তোমার হাত, নোয়াখাইল্লা রঙ্গ [motivational novels for students txt] 📗

Book online «Faisal Story, Md Ehsanul Haque Faisal, Md Enamul Haque, বাড়িয়ে দাও তোমার হাত, নোয়াখাইল্লা রঙ্গ [motivational novels for students txt] 📗». Author Md Ehsanul Haque Faisal, Md Enamul Haque, বাড়িয়ে দাও তোমার হাত, নোয়াখাইল্লা রঙ্গ



1 2 3 4 5 6
Go to page:
অনুভবে আজও তুমি

পর্ব-১

 

পাত্রপক্ষের সামনে গিয়ে চায়ের ট্রে ধরাম করে ফেলে দিলো মেহের। চায়ের কাপগুলো মেঝেতে পরে ভেঙে চুরমার হয়ে গেলো।গরম চা ছরিয়ে ছিটিয়ে পড়লো।কোনো দিকে না চেয়েই দৌড়ে পালালো মেহের। মায়ের কথামতো শাড়ির আচলে ঘুমটা টেনে চায়ের ট্রে নিয়ে ধীর পায়ে পাত্র পক্ষের সামনে এসেছিলো মেহের। চোখের কোনা দিয়ে একবার সবার উপর চোখ বুলিয়ে নিলো।সেখানে ফায়াজকে দেখেই হটাৎ সবকিছু থমকে গেলো।

হাতপা কাপতে শুরু করলো। সাথে হাতে থাকা চায়ের ট্রে ও ঠকঠক করে কাপছিলো। হাত অবশ হয়ে আসছিলো। কন্ট্রোল রাখতে পারেনি হাতের উপর। ধরাম করে চায়ের ট্রে হাত থেকে পড়ে গেলো আর মেহের ছুটে পালালো। সবাই বিষয়টি নিয়ে যখন বেশ হতভম্ব তখন ফায়াজ বাকা হাসি দিয়ে বললো,

ফায়াজঃ - আমরা কিছুই মনে করিনি। বুঝতে পারছি নার্ভাসনেস থেকে এমন হয়েছে। ইটস ওকে।

- ফায়াজের মা প্রথমে বিচলিত হলেও ছেলের পছন্দ তার উপর মেয়েটিকে তারও পছন্দ হয়েছে। দেখতে খুবই সুন্দরী আর শান্তমনা লাগছে। তার ছেলের জন্য এমনই সুন্দরী, শান্ত, ভদ্র, নম্র মেয়ে চেয়েছেন। যেকিনা তার অগুছালো ছেলের জীবনটা সাজিয়ে দিতে পারবে। ফায়াজ তার মা-বাবার সাথে মেহেরকে দেখতে এসেছে। ফায়াজের মা ফাহমিদা খান মেহেরের বাবা মাহমুদ জামানের উদ্দেশ্যে বললেন...

ফায়াজের মাঃ - আপনার মেয়ে মাশাল্লাহ আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে। সামনের সপ্তাহেই আমরা ওকে ঘরে তুলতে চাই। আমার মেয়ে লন্ডনে পড়াশোনা করে ওখানেই থাকে। আমি আর ওর বাবা সেখানেই মেয়ের সাথে থাকি। মেয়ে আসতে পারেনি একা আছে তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা ছেলের বউকে ঘরে তুলতে চাই। আমাদের লন্ডন ফিরতে হবে।

- মেহেরের বাবার মুখে স্বস্তির হাসি ফুটে। তিনি মেয়েকে কিছু জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করেন না তাই বললেন...

মেহেরের বাবাঃ আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আপনারা যেমনটা চান।

-মেহেরের মা বিয়ের কথা পাকা হওয়ায় মিষ্টি খেতে দিলেন। ফায়াজের বাবা সাফায়েত নওয়াজ খানের কিছুটা আপত্তি থাকলেও ছেলের ইচ্ছের জন্য তিনিও সায় দিলেন। অপরদিকে মেহের রুমে গিয়ে দরজা লক করে বেডে বসে আছে। এসি রুমেও ঘেমে নেয়ে যাচ্ছে। সারা শরীর থরথর করে কাপছে। তারপর ঢুকরে কেদে উঠলো। তারপর চিৎকার করছে...

মেহেরঃ -কেন? কেন? এতবছর পর আবারো কেন? আমিতো আর কখনোই ওনার মুখোমুখি হতে চাইনি। আমি ওনার থেকে পালিয়ে বেরিয়েছি। তবে কেন আবার আমার জীবনে ফিরে এসেছে? আমি রোজ খোদার কাছে প্রার্থনা করেছি আমি যেন কখনোই ওনার মুখোমুখি না হই তবে কেন?? খোদা আমি অন্যায় করেছি তোমার কাছে? কেন আমাকে এভাবে শাস্তি দিচ্ছো??

-তখনই দরজায় নক পড়লো। মেহেরের শরীর কাপছে। ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলো...

মেহেরঃ কে???

-মেহেরের ছোট বোন মিহু বললো...

মেহেরের বোনঃ - আপি আমি দরজা খোল।

- মেহের তাড়াতাড়ি করে চোখের পানি মুছে দরজা খোলে দিলো। মিহু হাসি হাসি মুখে ভিতরে ঢুকে মেহেরকে জড়িয়ে ধরলো।

মেহেরের বোনঃ - আপি ওদের তোকে পছন্দ হয়েছে। সামনের সপ্তাহে বিয়ে। আমার আপির বিয়ে। জিজুকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে। দেখতে একদম হিরোদের মতো।

-মেহেরের কানে একটা কথাই বাজছে, সামনের সপ্তাহে বিয়ে। মেহেরের বুক কেপে উঠলো। কেমন অস্থির লাগছে। তারপর বোনকে জরিয়েই কেদে দিলো।

মেহেরের বোনঃ - আপি, কাদছো কেন? কেদোনা। দেখো তুমি খুব সুখী হবে। অতীত মুছে ফেলো।

- মেহের চোখের পানি মুছে মায়ের ঘরে গেলো। মেহেরের মা মরিয়ম বেগম মেয়েকে দেখে কপালে চুমু খান। মেহের কিছুটা রেগে বলে...

মেহেরঃ - মা আমি এই বিয়ে করতে পারবো না বাবাকে বলে দেও।

- মরিয়ম বেগম মেয়ের কথা শুনে ঘাবড়ে যান।

মেহেরর মাঃ - কি হয়েছে মেহের? আর তুই ভালো করেই জানিস আমি তোর বাবার মুখের উপর কথা বলতে পারবোনা।

মেহেরঃ কখনো যদি বলতে পারতে আফসোস আমার জীবন টা নষ্ট হওয়া থেকে বেচে যেত।

মেহেরের মাঃ - মেহের কি বলছিস তুই?? ভালো ঘরে তোর বিয়ে হচ্ছে। সমস্যা কি?

মেহেরঃ - মা আমি বিয়ে করতে চাইনা। সবে মাত্র তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ করেছি। গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করিনি এখনো।

মেহেরের মাঃ - সেটা পরেও করতে পারবি।

মেহেরঃ -আমি চাইনা। আমি বিয়ে কোনোদিনই করতে চাইনা। আমি পড়াশোনা শেষ করে একটা জব নিয়ে নিজের মতো জীবনযাপন করতে চাই। একটু শান্তি চাই।

মেহেরের মাঃ মেহের, তুই তোর বাবার শরীরের কন্ডিশন জানিস। তোর বাবা খোজ নিয়েছে। ছেলের পরিবার খুবই ভালো। ছেলে ও মাশাল্লাহ। তোর বাবা সবটা বুঝেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মেহেরঃ - বাবাতো সব সিদ্ধান্ত বুঝেই নেয়। এত বুঝার পরও আমার আজ এই অবস্থা।

- মেহের কাদতে চলে গেলো।

মেহেরের মাঃ মেহের...

- মেয়েটা এক অতীত ধরে বসে আছে। অতীত নিয়ে পরে থাকলে তো জীবন চলবেনা। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ফায়াজ নওয়াজ খান নাইট ক্লাবে বন্ধুদের সাথে ড্রিংক করছে। জোরে মিউজিক বাজছে। ছেলে-মেয়েরা ডান্স করছে। আর ফায়াজ মদ গিলছে। এ তার রোজকার কাজ। সব কিছু বাদ দিতে পারলেও নাইট ক্লাবে বসে বসে মদ খাওয়া সে বাদ দিতে পারবেনা। মেয়েরা তার আশেপাশে ঘুরঘুর করছে। দূর থেকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। আর তা দেখে ফায়াজ ব্বাকা হাসছে। তখনি তার ফোন বেজে উঠলো। কিছুটা বিরক্ত নিয়ে ফোন রিসিভ করলো...

ফায়াজঃ - হ্যালো কে বলছেন??

- আয়াজ কিছুটা আন্দাজ করতে পারছে কে হতে পারে। তাই একটু বাইরের দিকে গেলো।

ফায়াজঃ - কিছু বলার না থাকলে ফোন রাখুন।

- অপরপাশ থেকে চট করেই বললো

মেহেরঃ - আমি মেহের।

ফায়াজঃ - মেহের, মেহের, মেহের। উফফ। মেহের ফোন করেছে আমায়। এখনো নাম্বারটা ভুলোনি??

মেহেরঃ - কি চান আপনি??

ফায়াজঃ কি চাই? ফায়াজ নওয়াজ খান কি চায়?? হা হা হা।

আমি শুধু তোমাকে বিয়ে করতে চাই। তুমিতো জানো তোমাকে বিয়ে করার স্বপ্ন আমার কতদিনের। শুধু আমার কেন?? তোমার ও তো তাই না? তোমার ফ্যামিলিও সেটা চায়। কেন তোমাকে বলেনি?

মেহেরঃ - ফায়াজ...

ফায়াজঃ - মেহের কেন এত ভাবছো? সামনে তোমার বিয়ে, রাত জাগা তোমার একদম উচিত নয়। সো ঘুমাও। গুড নাইট।

- ফায়াজ কন্ঠ কিছুটা শক্ত করে বললো...

ফায়াজঃ -আর হ্যা যদি ভুল করেও বিয়েটা ভাংগার চেষ্টা করো তবে ভালো হবেনা। তুমি জানো আমি কি কি করতে পারি?? তোমার এই ভুলের তোমার পরিবার না ধ্বংস হয়ে যায়। ওনাদের আমি ইনভলভ করতে চাইনা। আমাকে বাধ্য করোনা। নয়তো সবাই এই আগুনে জ্বলবে।

- মেহের ফোন রেখে দিলো। ও কি করবে বুঝতে পারছেনা। আর ফায়াজ ওর কাছে কি চায়? কিছুই বুঝতে পারছেনা। কাকে বলবে? কে বুঝবে?

ফায়াজ হাসছে। ফায়াজ হো হো করে হাসছে। শান্তির হাসি। হঠাৎ ফায়াজের বন্ধু ইমরুল বললো....

ফায়াজের বন্ধুঃ - ফায়াজ তুই কি করছিস এসব? এসব করে তুই কি পাবি?

ফায়াজঃ - কি করছি?? বিয়ে করছি। তোর বন্ধু বিয়ে করছে। তোর তো খুশি হওয়ার কথা।

ফায়াজের বন্ধুঃ - খুশি হতাম যদি মেয়ে মেহের না হতো। আমি তোকে চিনি তুই কোনো ভয়ংকর খেলা খেলছিস। ছেড়ে দে এসব।অন্য কাউকে বিয়ে করে ভালো থাক।

ফায়াজঃ - ভালো?? ভালো থাকার জন্যই তো বিয়ে করছি।

ফায়াজের বন্ধুঃ - তোর মনে কি চলছে বলতো?? অন্যকে জ্বালাতে গিয়ে নিজে জ্বলে যাস না।

ফায়াজঃ - ভালোবাসায় তো অনেক আগেই হেরে বসে আছি, কিন্তু ঘৃণার খেলায় হারবো না। ঘৃণার খেলায় জিতবে শুধু ফায়াজ নওয়াজ খান। প্রত্যেকের লাভ স্টোরির এন্ডিং হ্যাপি ওর স্যাড হয়। কিন্তু আমার লাভ স্টোরি ফায়াজ নওয়াজের লাভ স্টোরি একটু ডিফারেন্ট হবে। হ্যাপি ওর স্যাড ফ্যাক্ট নয়। এখানে কোনো মজনু থাকবেনা। কিন্তু লায়লা অবশ্যই থাকবে আর তার পরিনতি খুব ভয়াবহ হবে।

আর কি বলছিলি জ্বলে যাবো??

হাহাহা।। যতটুকু জ্বলার জ্বলে গিয়েছি নতুন করে আর জ্বলবো না অনলি জ্বালাবো কিন্তু ছাই করবোনা।

-মেহের জানে ওর জন্য কি অপেক্ষা করছে। ও হিংস্র বাঘের মুখে পড়তে যাচ্ছে। যার শিকার শুধু মেহের। ওর ইচ্ছে করছে মরে যেতে। বিয়ের আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু মেহের কিছুতেই বিয়েটা ভাংতে পারছেনা। কি করে ভাংবে? কি বলবে?? আর কেই বা শুনবে।

মেহের ফুলে ঘেরা বিছানায় বসে আছে। ওর দম বন্ধ হয়ে আসছে। মনে হচ্ছে কিছু একটা এর গলা চেপে ধরেছে তাই শ্বাস নিতে পারছেনা। অক্সিজেনের অনেক অভাব। ফুলের ঘ্রাণ ও ওর কাছে বিশ্রী লাগছে। বিষাক্ত লাগছে। বিছানা থেকে নেমে মাথার ওড়নাটা বিছানায় ছুড়ে ফেলে দিয়ে আয়নার সামনে গিয়ে সব গয়না খোলে ফেলল। তারপর জোরে নিশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছে। এই গয়নাগুলো হয়তো ওর গলা চেপে ধরেছিলো। তাই নিশ্বাস নিতে পারেনি কিন্তু এখনো আগের মতোই নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।তাই দৌড়ে বারান্দায় চলে গেলো খোলা হাওয়ায় প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে।

 

পর্ব-২

 

- বারান্দায় দক্ষিনা বাতাস হুর হুর করে বইছে। মেহের চোখ বন্ধ করে দু'হাত প্রসারিত করে নিশ্বাস নিচ্ছে। কিছুটা ভালো লাগছে এখন। ফায়াজ ড্রিংক করে ঢুলতে ঢুলতে রুমে ঢুকলো। পুরো ঘর জুড়ে ফুল আর ফুল। ফায়াজ চোখ বড় বড় করে তাকালো না ভুল নয় ঠিক ই দেখছ। ওর মনে হচ্ছে নেশা বেশি হওয়ায় কোনো ফুলের বাগানে ঢুকে পড়েছে। তারপরই মনে হলো...

ফায়াজঃ - ওহ, আমিতো বিয়ে করেছি। আজ আমার বাসর। তাই এতো ফুল।

- ফায়াজ একটা ফুল ছিড়ে নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রাণ নিচ্ছে। আর বলছে...

ফায়াজঃ - কি সুন্দর ঘ্রাণ। তা আমার বউ কই? বাসর আমি কার সাথে করবো??

- ফায়াজ বেডে কাউকে দেখতে পেলো না। না পুরো রুমে। বারান্দায় গিয়ে দেখে মেহের চোখ বন্ধ করে দু'হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে আছে।

ফায়াজঃ - সি ইজ হেয়ার। মাই ওয়াইফ ইজ হেয়ার।

- মেহের ফায়াজের কথা শুনে চোখ খোলল। ফায়াজকে দেখে মেহের বুঝতে পারলো ও ড্রাংক। মেহেরের এই বিয়ে, সম্পর্ক, ফায়াজকে নিয়ে যে দুশ্চিন্তা ছিলো তা ঝেড়ে ফেলেছে।সবকিছু খোদার হাতে ছেড়ে দিয়েছে।

- ফায়াজ মেহেরের দিকে এগিয়ে বলল....

ফায়াজঃ - আমি তো ভেবেছিলাম তুমি পালিয়েছো। ভয় পেয়ে পালিয়েছো।

- মেহের মনে মনে বলছে...

মেহেরঃ - আমি আর পালাবোনা ফায়াজ। আমি তোমার সাথেই থাকবো যতদিন তুমি চাও। আমিও দেখতে চাই তুমি কি করো, কি চাও।

- মেহের কোনো কথা বলছেনা দেখে ফায়াজের প্রচুর রাগ হচ্ছে। ও মেহেরের একদম কাছে চলে গেলো। মেহের বারান্দার রেলিং ঘেষে দাড়িয়েছিল। ফায়াজ ওর খুব কাছে চলে যাওয়ায় ও পিছনের দিকে কিছুটা হেলে দাড়ালো। খোলা বারান্দা পরে যাওয়ার রিক্স আছে তাই সরে যেতে চাইলো আর তখনই ফায়াজ দু'হাত রেলিং'এর দু'পাশে রাখলো। ফায়াজ ওর সাথে মিশে গেছে। ওর উষ্ণ নিশ্বাস ওর মুখে পড়ছে সাথে মদের তীব্র বাজে গন্ধটাও। মেহেরের গন্ধটা সহ্য হচ্ছে না, বমি পাচ্ছে।

মেহেরঃ - সরুন, আপনার মুখ থেকে বাজে গন্ধ বের হচ্ছে। আমি নিশ্বাস নিতে পারছিনা।

ফায়াজঃ বাজে গন্ধ?? কি বলছো?? তুমি ভুল বলছো। এটা মোটেও বাজে গন্ধ না। ওয়েট তোমার ধারণা পাল্টে দিচ্ছি।

- ফায়াজ মেহেরের মুখের আরো কাছে চলে গেলো আর জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলছে। এবার আর মেহেরের সহ্য হলো না একদমই নিশ্বাস নিতে পারছেনা। পেটের ভিতর সবকিছু দলা পাকিয়ে যাচ্ছে। মেহের ফায়াজকে হালকা করে ধাক্কা দিয়ে সরে যায় আর জোরে জোরে শ্বাস নেয়। ফায়াজকে ধাক্কা দেওয়ায় ফায়াজ রেগে যায়। মেহেরকে ওয়ালের সাথে চেপে ধরে। মেহের এবার কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। ফায়াজকে দেখে এখন আর নেশা গ্রস্ত মনে হচ্ছে না। ফায়াজ চোখ মুখ শক্ত করে মেহেরকে বললো...

ফায়াজঃ - তুই আমাকে ধাক্কা মারিস?? ফায়াজকে?? তোর সাহস তো কম নয়?? এতো সাহস হয়েছে তোর। মদের গন্ধ খুব বিশ্রী না?? তোকে আজ এই গন্ধ খাওয়াবো।

- ফায়াজ মেহেরের দু'হাত নিজের একহাত দিয়ে চেপে ধরলো আর অন্য হাতে মেহেরের নাক চেপে ধরলো। ফলে মেহের শ্বাস নেওয়ার জন্য হা করলো। তারপর নিজের ঠোঁট দিয়ে ওর ঠোঁটে রেখে জোরে জোরে ফু দিচ্ছে। মেহের শ্বাস নিতে পারছেনা। শ্বাস নিতে পারছেনা তার উপর এমন বিশ্রী গন্ধ। মেহের ছুটার জন্য ছটফট করছে। ফায়াজ মেহেরর ঠোঁট ছেড়ে গলায় মুখ ডুবালো।কিন্তু এবার আর ফায়াজের কোনো রেসপন্স পাচ্ছেনা। মেহেরের হাত ও হালকা লাগছে। মেহের ফায়াজের মাথা তুলে দেখে ও ঘুমিয়ে পড়েছে। ওকে টেনে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো। গায়ে চাদর টেনে দিয়ে আলতো করে ওর গাল ছুয়ে দিলো। তারপর কাদতে লাগলো।

মেহেরঃ - ফায়াজ কেন এমন করছেন?? কেন নিজের সাথে নিজে খেলছেন??

- ফায়াজের ঘুম ভাংতেই নিজেকে ফুলের বিছানায় আবিষ্কার করলো। তারপর উঠে বসতেই মেহেরের দিকে চোখ যায়। মেহের ওর পাশেই বেডে ঢেলান দিয়ে বসে বসে ঘুমাচ্ছে। লাল শাড়ি মুখের মেকাপ নষ্ট হয়ে গেছে। লিপস্টিক লেটকে আছে ঠোঁটের চারপাশে। কিন্তু চেহেরায় একটা আভা ফুটে উঠেছে। কি পবিত্র লাগছে। একদম বাচ্চাদের মতো। ফায়াজের ইচ্ছে করে ওর গাল আলতো করে ছুয়ে দিতে। কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে দমিয়ে রাখলো। আর মনে মনে বলছে...

মেহেরঃ -ফায়াজ, ও দেখতেই নিস্পাপ। ওর ভিতরটা কলুষিত। ও তোর চেয়েও জঘন্য। ও একটা প্রতারক। তাই ওর এই মাসুম চেহারা দেখে ফেসে যাসনা। ওর এই চেহেরার আড়ালে ভয়ংকর কিছু লুকিয়ে আছে। ওর এই মায়াময় চেহেরা কতজনের জন্য কাল হয়েছে তার হিসেব হয়তো ও নিজেই রাখেনি।

- ফায়াজ ওকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিলো। মেহের নিচে পড়ে গেলো। কাচা ঘুম ভাংগার কারণে কিছুই বুঝতে পারছেনা। কয়েক সেকেন্ড পর বুঝতে পারলো ও মেঝেতে। তারপর বেডের দিকে চেয়ে দেখলো ফায়াজ ওর দিকে রাগী দৃষ্টি নিয়ে চেয়ে আছে।

ফায়াজঃ নবাবজাদির মতো ঘুমাচ্ছো কেন? কয়টা বাজে খেয়াল আছে? এখন কি আমাকে তোমাকে ডেকে তুলতে হবে?? যত্তসব।

- মেহের কিছু না বলে হাত ঢলতে ঢলতে ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

মেহেরঃ - কোথায় যাচ্ছো??

- মেহের চোখ বড়বড় ফায়াজের দিকে তাকালো। কি আশ্চর্য ছেলে। ঘুম থেকে উঠে মানুষ কই যায়? আর দেখছে আমি ওয়াশরুমের দিকে যাচ্ছি তবুও জিজ্ঞেস করছে? ফায়াজ উঠে মেহেরের কাছে গিয়ে বললো এটা আমার ওয়াশ রুমে যাওয়ার টাইম। আগে আমি ফ্রেশ হবো তারপর তুমি। লাইনে থাকো। ফায়াজ ওয়াশরুমে চলে গেলো। মেহের অগত্যা দাড়িয়ে রইলো।

ওয়াশরুমের ভিতর থেকে পানির আওয়াজ হচ্ছে। ৩০ মিনিট হয়ে গেলো কিন্তু তার বের হেয়ার নাম নেই। মেহের বিরক্ত হয়ে জামাকাপড় নিয়ে বসে আছে। আর মনে মনে গালাগাল করছে

মেহেরঃ - একটা ছেলের ফ্রেশ হতে এত সময় লাগে? কয়দিন গোসল করেনি আল্লাহই জানে। ১০দিনের গোসল একদিনে করছে।

- মেহের ফ্রেশ হয়ে হাল্কা পেস্ট কালার শাড়ি পরে কোনো সাজগোছ ছাড়াই নিচে গেলো। মেহের নিচে যেতেই ওর শাশুড়ী হাসি মুখে এগিয়ে এলো তারপর নাস্তা করতে বসালো। মেহেরের পাশে ফায়াজ এসে বসে নাস্তা করতে শুরু

1 2 3 4 5 6
Go to page:

Free e-book «Faisal Story, Md Ehsanul Haque Faisal, Md Enamul Haque, বাড়িয়ে দাও তোমার হাত, নোয়াখাইল্লা রঙ্গ [motivational novels for students txt] 📗» - read online now

Comments (0)

There are no comments yet. You can be the first!
Add a comment